পার্বত্য চট্রগ্রামে বসবাসরত আদিবাসীদের মধ্যে চাকমারা সংখ্যাগরিস্থ । রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে এদের বসবাস। চাকমারা বুদ্ধ ধর্ম পালন করে। তাদের রয়েছে নিজস্ব ভাষা, রীতি-নীতি ও সমাজ কাঠামো । জুম চাষ এদের প্রধান চাষাবাদ। বিজু এদের প্রধান উৎসব। এদের ভাষার নাম চাকমা ভাষা । বাংলাদেশে বসবাসরত অন্যান্য আদিবাসীদের মধ্যে এরা সবচেয়ে বেশি শিক্ষিত । নারী-পুরুষ সবাই খুব কর্মঠ। চাকমা মেয়েরা নিজেদের তৈরি পোশাক পরে। তারা তুলা নিজেদের কাঁপর-চোপড় এবং পরিবারের কাপড়ও বুনে। চাকমারা খুবই সহজ-সরল প্রকৃতির। বুদ্ধ ধর্ম অনুসারী এই চাকমারা ধর্মের প্রতি খুব অনুরাগী । এদের নিজস্ব মাতৃ ভাষা থাকলেও মাতৃ ভাষার মাধ্যমে শিক্ষা লাভের সুযোগ থেকে এরা বঞ্জিত । যার ফলে এরা নিজেদের ভাষায় কথা বললেও ভাষাটা বর্ণের আকারে লিখতে পারেনা। এদের সমাজ সংসকৃতি সবকিছুই আলাদা। এদের রয়েছে নিজস্ব খেলা-ধুলা ও রীতিনীতি। ঘিলে হারা, নাদেং হারা,ফর হারা, বদাবদি, ফোললা-ফুল্লি হারা এগুলো তাদের খেলাধুলার মধ্যে অন্যতম । জাদু-মন্ত্রের বিশ্বাস রয়েছে এই সমাজে। এদের সমাজে রয়েছে নিজস্ব রীতিনীতি। সমাজে বসবাসরত সবাই এগুলো মেনে চলে আর তাই তাদের সমাজে খারাপটা খুব বেশি চোখে পরবেনা। চাকমাদের রয়েছে নিজস্ব রাজা। রাঙ্গামাটি সার্কেল তাকে বলা হয় চাকমা সার্কেল। চাকমা রাজা এই সার্কেলের প্রধান।
চাকমাদের উৎসব
চাকমাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বিজু। বাংলা বছরের শেষ দুদিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন এ উৎসব পালন করা হয়। বাংলা বছরের প্রথম দিনকে বলা হয় ফুল বিজু এবং শেষ দিনকে বলা হয় চৈত্র সংক্রান্তি বা মূল বিজু। ফুল বিজুর দিন সকাল বেলা চাকমারা ঘর-বাড়ি পরিস্কার করে ফুল দিয়ে সাজায়, বুড়ো-বুড়িদের গোসল করায়, নতুন কাপড় দেয়। রাতে বসে পরের দিনের পাচন তরকারি রান্নার জন্য সব্জি কাটতে বসে যা কমপক্ষে ৫টি এবং বেশি হলে ৩২ রকম সব্জির মিশেলে রান্না করা হয়। পরের দিন মূল বিজু, এদিন চাকমা তরুণ-তরুণীরা খুব ভোরে উঠে কলা পাতায় করে কিছু ফুল পানিতে ভাসিয়ে দেন। তারপর সবাই বিশেষ করে ছোটোরা নতুন জামা-কাপড় পরে বাড়ি বাড়ি ঘুরতে থাকে। তবে গ্রাম গুলোতে প্রাচীনকালের মতোন করে ঘিলা খারা (খেলা) হয়। পরের দিন নতুন বছর বা গয্যে পয্যে, নতুন বছরের দিন সবাই মন্দিরে যায়, খাবার দান করে, ভালো কাজ করে, বৃদ্ধদের কাছ থেকে আশীষ নেয়।
চাকমা লোকসাহিত্য বেশ সমৃদ্ধশালী। তাদের লোক কাহিনীকে বলা হয় উবগীদ। চাকমাদের তাল্লিক শাস্ত্র বা চিকিৎসা শাস্ত্র অনেক সমৃদ্ধ। আর বয়ন শিল্পে চাকমা রমণীদের সুখ্যাতি জগৎ জুড়ে।
একসময় জুম চাষের ওপর নির্ভরশীল এ জনগোষ্ঠী এখন নিজ প্রচেষ্টা ও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় শিক্ষা-দীক্ষায় বেশ এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে অগ্রসর আদিবাসী জনগোষ্ঠী হিসেবে তাই সহজেই বিশেষভাবে পরিচিত চাকমারা। পার্বত্য চট্টগ্রাম যে তিনটি সার্কলে বিভক্ত এর অন্যতম চাকমা সার্কল। বর্তমানে (২০১২) চাকমা সার্কলের চিফ বা চাকমা রাজা হিসেবে খ্যাত ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় বর্তমান তত্ত্ববধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
চাকমা লোকসাহিত্য বেশ সমৃদ্ধশালী। তাদের লোক কাহিনীকে বলা হয় উবগীদ। চাকমাদের তাল্লিক শাস্ত্র বা চিকিৎসা শাস্ত্র অনেক সমৃদ্ধ। আর বয়ন শিল্পে চাকমা রমণীদের সুখ্যাতি জগৎ জুড়ে।
একসময় জুম চাষের ওপর নির্ভরশীল এ জনগোষ্ঠী এখন নিজ প্রচেষ্টা ও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় শিক্ষা-দীক্ষায় বেশ এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে অগ্রসর আদিবাসী জনগোষ্ঠী হিসেবে তাই সহজেই বিশেষভাবে পরিচিত চাকমারা। পার্বত্য চট্টগ্রাম যে তিনটি সার্কলে বিভক্ত এর অন্যতম চাকমা সার্কল। বর্তমানে (২০১২) চাকমা সার্কলের চিফ বা চাকমা রাজা হিসেবে খ্যাত ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায় বর্তমান তত্ত্ববধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।